সময় যদি ফিরে আসে, তাহলে কি আমরা সহজেই নিজেদের ভুল শুধরে নিয়ে সব কাজ নিখুঁত ভাবে করতে পারবো ?       

সারা পৃথিবীতে যখন সমস্ত শক্তি, জ্বালানি শেষ হওয়ার দিকে, তখন একটা যুদ্ধ হয় এবং পৃথিবী প্রায় ধ্বংসের দিকে চলে যায়। গোটা &nbsp;পৃথিবীর অবশিষ্ট এনার্জির &nbsp;মালিক হয় টরাস নামের একটি কর্পোরেশন । মোটামুটি টরাসই &nbsp;সব কিছু পরিচালনা করতে শুরু করে তাদের কাছে থাকা মেশিন, রোবোট, ও সৈন্যদের সাহায্যে। অন্যদিকে আছে একটি বিপ্লবী দল “ব্লক”। যারা টরাস কর্পোরেশন এর খারাপ কাজ গুলির বিরোধিতা করে এবং টরাস কে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায় । রেন্টন,&nbsp; টরাস এ থাকা
কালীন একটি মেশিন আবিষ্কার করে যেটা আনলিমিটেড এনার্জি তৈরী করতে পারে। কিন্তু, যেহেতু টরাস এর মনোভাব ভাল ছিল না, রেন্টন তার মেশিন সহ পালিয়ে আসে। অন্যদিকে বন্ধু হ্যানা সেখানেই থেকে যায়। বহু বছর পর হ্যানা ওখান থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয় এবং তাদের দুজনের আবার দেখা হয় । 

পুরো সিনেমাটি শুট হয়েছে রেন্টনের ঘর থেকে তার বেসমেন্ট এর মধ্যে।

গল্প শুরু হয় রেন্টনের ঘর থেকে। কোনো একটা দুঃ স্বপ্নে রেন্টনের ঘুম ভেঙে যায় তখনই দরজা দিয়ে ভিতরে ঢোকে তিন দুষ্কৃতী( সোনি, ফাদার ,ব্রাদার )। তারা রেন্টন ও হ্যানা কে বেসমেন্ট এ ধরে নিয়ে যায় এবং সেখানে দুজনকে চেয়ার এর সাথে বেঁধে রাখে। প্রাথমিক ভাবে দুষ্কৃতীগুলো “স্ক্রিপস” চাইতে থাকে । ওটা তত্কালীন টাকার নাম ছিল। রেন্টন যখন পালানোর চেষ্টা করে, সে মারা যায় এবং তার ঘুম ভেঙে যায়। সে ভাবতে থাকে সবটাই কোনো দুঃ স্বপ্ন ছিল। তখনি তিন জন দুষ্কৃতী তার ঘরে ঢোকে এবং শুরু হয় দ্বিতীয় লুপ। এরপর রেন্টন আবার মারা যায় এবং তার বিছানায় জেগে ওঠে এবং এইভাবেই লুপ চলতে থাকে ।

কোনরকম আলোচনায় যাবার আগে আমাদের মাথায় রাখতে হবে, এটি একটি কম বাজেটের মুভি ।ডিরেক্টর টনি এলিয়ট একটা ইন্টারভিউ তে জানিয়েছিলেন মুভিটি বানাতে তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় 2 মিলিয়ন ডলার। গল্পের শুটিং হয়েছে একটা ছোট্ট জায়গার মধ্যে। চরিত্রের সংখ্যাও হাতে গোনা । প্রধান চরিত্র রেন্টন
অর্থাৎ রবি আমেল এবং হানাহ&nbsp; অর্থাৎ রাসেল
টেলর&nbsp; যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন এবং অন্য
চরিত্রেরাও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। 

সিনেমাটিতে সব মিলিয়ে নয় টা লুপ দেখানো হয়েছে এবং একাধিক টাইম লাইনের উল্লেখ আছে। প্রতিটি লুপের বেস এক্ হলেও প্রতিটিই একে অপরের থেকে আলাদা ও বেশ কিছু টুইস্ট &nbsp;আছে। এক একটা লুপের শেষে আলাদা আলাদা তথ্য যোগ হয়েছে, যেটা মুভিটিকে আরো ইন্টারেস্টিং বানাতে সাহায্য করেছে এবং এরপর যখনই আমাদের মনে হতে শুরু করে যে আমার সব বুঝে গেছি, তখনই এ অন্য কোনো তথ্য বা টুইস্ট এসে সব
কিছু আবার পাল্টে দেয়। অর্থাৎ প্লট ডেভেলপমেন্ট প্রশংসনীয় । আমরা সকলেই জানি যে টাইমলুপ মানে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি কিন্তু এই গল্পের স্মার্ট স্টোরিলাইন
&nbsp;এর জন্য ব্যাপারটা কখনোই বিরক্তির জায়গায় যায়নি বরং একটু একটু করে দর্শকদের আগ্রহী করে তোলে। প্রতিটি লুপ এবং তাদের মধ্যে যেভাবে কানেকশন তৈরি করা হয়েছে, সেটা বেশ ভাল। আপনাকে কষ্ট করে পুরো মুভি শেষ করতে হবে না, গল্পই আপনাকে টেনে নিয়ে যাবে। 

এই মুভিতে অসংখ্য লজিকাল ভুল আছে, এটা অস্বীকার করার কোনো জায়গা নেই। তবে, একজন সাইন্স ফিকশন লাভার হিসাবে এই সিনেমা এক দুবার দেখাই যায়। যদি আপনি সাই-ফি জ্যঁর  এর ভক্ত হন এবং টাইম লুপ আপনার পছন্দের হয় এবং আর্টিসটিক পারফেক্ট মুভির পরিবর্তে কোনো হালকা, কম মাথা-ঘামান মুভি খুঁজছেন তাহলে এই মুভি আপনার জন্য। 

আমি রেকমেন্ড &nbsp;করব, কোনরকম এক্সপেকটেশন ছাড়া দেখতে বসুন এবং আপনার অ্যানালিটিকাল ব্রেন টাকে অন্য জায়গায় রেখে আসুন। টাইম পাস ও এন্টারটেনিং &nbsp;মুভি হিসাবে দেখলে খারাপ লাগবে না। তবে যদি আপনি খুব খুঁটিয়ে মুভি দেখেন এবং পারফেক্ট ক্রিয়েশন ছাড়া &nbsp;পছন্দ না করেন, সে ক্ষেত্রে স্কিপ করে যাবেন। &nbsp;

ARQ(2016) Review in Bengali

More from this author